শিক্ষাঙ্গন
ফেসবুকে ছবি শেয়ার করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ২৯

সংগৃহীত
ফেসবুকে বিকৃত ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
এতে বিএনপি-জামায়াতের উভয় পক্ষের অন্তত ২৯ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকেই হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আহত বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মিজী, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নেছার আহম্মেদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি কামাল। এর মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহত জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে রায়েছেন, হাফেজ মো. আব্দুল মোতালেব, হাফেজ মো. ইলিয়াছ হোসেন, ফরিদুল ইসলাম, হাফেজ আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, ফয়সাল হোসেন, রাশেদ হোসেন, সজিব হোসেন, শরীফ পাটওয়ারী, রাজু ও শামীম হোসেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হাফেজ মো. ইলিয়াছ হোসেনের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার হয়। যা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘঠে। এতে ২৯ জন আহত হয়েছেন।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম অভিযোগ করে বলেন, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার বিকৃত একটি ছবি শেয়ার করেন। যার ফলে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকালে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাওলানা ইলিয়াসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে একটি ছবি আমার অসাবধানবশত শেয়ার হয়ে গেছে। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন জানানোর পর আমি ডিলেট করে দিই।
তিনি বলেন, আমার মোবাইলটি ঘরে থাকে, অনেক সময় বাচ্চারা ব্যবহার করে, এখন তো বাচ্চারাও শেয়ার করতে পারে। ঘটনা যা হয়েছে, আমি ফেসবুকে পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তার পরেও শুক্রবার সকালে বসার কথা ছিল। আমার উদ্দেশ ছিল আমি ক্ষমা চাইবো। কিন্তু তারা বসার পূর্বেই আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আব্দুল মোতালেব বলেন, ক্ষমা চাইলে-তো আর কিছু থাকে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করলে এলাকার লোকজন ও গ্রামবাসী তাদেরকে প্রতিহত করে। আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীরা চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের হামলা ও মারধরের বিষয়টি উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে। এখন দলীয় যে নির্দেশনা আসবে, আমরা ওই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবো।
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান বলেন, আমি বিষয়টি নিজে দেখছি। যা হয়েছে, এ জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তারপরেও হামলা করাটা দুঃখজনক।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ রহিম পাটওয়ারী বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবিকে মূর্তি বানিয়ে মাওলানা ইলিয়াস ফেসবুকে পোস্ট করেন। এতে আমাদের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানালে জাময়াতের নেতা-কর্মীরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগে পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।








